১) আস্সালামুআলাইকুম, আমি ডাঃ ইফতেখার, আপনার রোগ নিয়ে আপনার সাথে কথা বলব।
২) আপনিতো জানেন যে আপনার Epilepsy নামের একটি রোগ আছে, বাংলায় যাকে মৃগী রোগ বলা হয়, এটা মস্তিষ্কের কোন অংশ থেকে অতিরিক্ত তড়িৎ নির্গত হওয়ার ফলে হয়ে থাকে।
৩) আপনি বর্তমানে এই রোগ নিয়ন্ত্রনের জন্য কি ঔষধ খাচ্ছেন তা বলতে পারবেন কি? আপনার সর্বশেষ খিচুনি কবে হয়েছে? (অথবা, আমি ইতোমধ্যে জানতে পেরেছি যে আপনি এই ঔষধ খাচ্ছেন, আপনার এত মাস যাবৎ খিচুনি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে)।
৪) আপনাকে জেনে রাখতে হবে যে এই রোগের রুগীদের খিচুনি টানা ৬ মাস বন্ধ থাকার পরই কেবল বাচ্চা নেওয়া যাবে। অন্যথায় মা ও সন্তান উভয়ের ক্ষতি হতে পারে
৫) গর্ভাবস্থা ছাড়া যেমন জীবন যাত্রার কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়, গর্ভাবস্থায়ও সেই সকল নিয়ম কানুন, যেমন, উঁচু জায়গার কিনার ঘেষে হাটাচলা করা বাদ দেওয়া, বিপদজনক মেশিন, জলাশয় কিংবা আগুনের কাছে না যাওয়া, পুকুর কিংবা গভীর জলাশয়ে গোসল পরিহার করা, বাথরুম ব্যবহারের সময় দরজা খোলা রাখা ইত্যাদি মেনে চলতে হবে।
৬) আর ঔষধের ক্ষেত্রে কেবল নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ যেমন Levetiracetam, Carbamazepine বা Lamotrigine খাওয়া যাবে, এগুলোর ঝুকি কম, অন্যান্য ঔষধ বাচ্চার মারাত্মক ক্ষতি সাধন করতে পারে, যেমন ঠোঁট কাটা, মুখের তালু ফাটা, হার্টের সমস্যা করা ইত্যাদি।
৭) এসকল ঝুকি এড়াতে আমরা শুধুমাত্র পূর্বে বর্ণিত নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ যত কম ডোজে পারা যায় দেওয়ার চেষ্টা করব। আর আপনাকে গর্ভ ধারনের ২ মাস আগে থেকেই প্রতিদিন ৫ মি.গ্রা. করে ফলিক এসিড খেতে হবে, এবং তা প্রথম তিন মাস চালিয়ে যেতে হবে।
৮) আর গর্ভাবস্থায় মায়েরও সমস্যা হতে পারে, যেমন খিচুনি বেড়ে যেতে পারে, সেক্ষেত্রে দ্রুত চিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৯) গর্ভাবস্থায় আপনাকে নিয়মিত ফলোআপে আসতে হবে। এসময় নিয়মিত কিছু পরীক্ষা যেমন, রক্তের সিবিসি, আল্ট্রাসোনোগ্রাম, ইইজি ইত্যাদি করা লাগতে পারে।
১০) গর্ভধারণ অবস্থায় খিচুনি অতিমাত্রায় বেড়ে গেলে চিকিৎসার সুবিধার্থে গর্ভপাতও করা লাগতে পারে।
১১) গর্ভকালীন শেষ মাসে আপনাকে প্রতিদিন ২০ মি.গ্রা. করে ভিটামিন-কে খেতে হবে, আর বাচ্চা জন্মের পর অবশ্যই তার মাংস পেশিতে ১ মি.গ্রা. ভিটামিন-কে ইনজেকশন দিতে হবে।
১২) বাচ্চা ডেলিভারির জন্য নর্মাল ডেলভারি বা সিজারিয়ান সেকশন সাধারন মানুষের মতই সম্ভব, তবে ডেলিভারি হাসপাতালে করাই উত্তম।
১৩) বাচ্চা জন্মের পরও আপনাকে ঔষধ চালিয়ে যেতে হবে।
১৪) বাচ্চাকে নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়াতে হবে এবং পরবর্তী দিক নির্দেশনার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
১৫) আপনি আমার কথা বুঝতে পেরেছেন?
১৬) আপনার আর কিছু জানার আছে?
১৭) ধন্যবাদ।
================================== RheumaLife =================================
=================================== iCarePG ===================================
No comments:
Post a Comment