১) আস্সালামুআলাইকুম, আমি ডাঃ ইফতেখার, আপনার রোগ নিয়ে আপনার সাথে কথা বলব।
২) আপনিতো জানেন যে আপনার SLE নামক একটি রোগ আছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শরীরের বিরুদ্ধেই কাজ করার জন্য হয়ে থাকে।
৩) এই রোগের চিকিৎসার জন্য আমরা ২ ধরনের দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকি, এক জীবন যাত্রার কিছু নিয়ম কানুন পরিবর্তন করা, আর ঔষধ সেবন করা।
৪) গর্ভাবস্থায়ও সেই সকল নিয়ম কানুন, যেমন রোদ থেকে বেঁচে থাকা, ধুমপান বাদ দেওয়া ইত্যাদি মেনে চলতে হবে।
৫) আপনি হয়তো জানেন এ রোগের তীব্রতা উঠানামা করে, তাই রোগের তীব্রতা অনুযায়ী আমরা ঔষধ দিয়ে থাকি। গর্ভধারণ করতে চাইলে টানা ৬ মাস শুধুমাত্র Hydroxychloroquine/low dose prednisolone খাওয়া অবস্থায় রোগটি নিয়ন্ত্রনে থাকতে হবে। MTX/Cyclophosphamide/MMF/high dose steroid খেলে এগুলো বন্ধ করার ৬মাস পর্যন্ত বাচ্চা নিতে পারবেন না।
৬) গর্ভধারন অবস্থায় এ রোগের রুগীদের এক তৃতীয়াংশের ক্ষেত্রে রোগের তীব্রতা একই রকম থাকতে পারে, এক তৃতীয়াংশের ক্ষেত্রে তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে, এক তৃতীয়াংশের ক্ষেত্রে তীব্রতা কমেও যেতে পারে। তীব্রতা বেড়ে গেলে আমরা Steroid এর ডোজ বাড়িয়ে চিকিৎসা দিব।
৭) গর্ভধারণ করলে মায়ের কিছু সমস্যা যেমন প্রেশার বেড়ে যাওয়া (প্রিএক্লাম্পশিয়া), কিডনির সমস্যা হওয়া (লুপাস নেফ্রাইটিস), ডায়বেটিস হওয়া এমনকি রোগের তীব্রতা বেড়ে গিয়ে মারাও যেতে পারেন।
৮) আর বাচ্চার কিছু সমস্যা যেমন, ওজন কম হওয়া, হার্টের অসুখ হওয়া, অকাল গর্ভপাত, এমন কি বচ্চা নষ্টও হতে পারে।
৯) গর্ভাবস্থায় অন্যান্য নিয়ম মানার পাশাপাশি প্রথম তিনমাস প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড ট্যাবলেট খেতে হবে।
১০) গর্ভধারণ অবস্থায় নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ, যেমন: স্টেরয়েড, এজাথায়েপ্রিন, হাইড্রক্সিক্লোরোকোইন এবং সাইক্লোস্পোরিন ছাড়া অন্য কোন ঔষধ ব্যবহার করা যায় না, করলে বাচ্চার ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
১১) গর্ভাবস্থায় আপনাকে ২৮ সপ্তাহ পর্যন্ত মাসে ১বার, ২৮-৩২ সপ্তাহ পর্যন্ত ২সপ্তাহে ১বার, তারপর থেকে সপ্তাহে ১বার করে পরামর্শের জন্য আসতে হবে। আর নিয়মিত কিছু পরীক্ষা যেমন, রক্তের সিবিসি, কিডনির মার্কার, লিভারের মার্কার, এস.এল.ই এর মার্কার, আল্ট্রাসোনোগ্রাম ইত্যাদি করে রিপোর্ট দেখাতে হবে।
১২) গর্ভধারণ অবস্থায় রোগটির তীব্রতা অতিমাত্রায় বেড়ে গেলে চিকিৎসার সুবিধার্থে গর্ভপাতও করা লাগতে পারে।
১৩) বাচ্চা ডেলিভারির জন্য নর্মাল ডেলভারি বা সিজারিয়ান সেকশন সাধারন মানুষের মতই সম্ভব। তবে মা ও বাচ্চা উভয়ের জন্য আই.সি.ইউ. এর ব্যবস্থা আছে এমন হাসপাতালে ডেলিভারি করাই ভাল।
১৪) বাচ্চা জন্মের পর বাচ্চাকে নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়াতে হবে, কিছু ঔষধ বুকের দুধের মাধ্যমে বাচ্চার শরীরে যেতে পারে। আর ডেলিভারির পরও রোগের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে। তাই সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
১৫) আপনি আমার কথা বুঝতে পেরেছেন?
১৬) আপনার কি আর কিছু জানার আছে?
১৭) ধন্যবাদ।
================================== RheumaLife =================================
No comments:
Post a Comment