Sunday, March 26, 2017

Counselling: Epilepsy


১) আস্সালামুআলাইকুম, আমি ডাঃ ইফতেখার, আপনার রোগ নিয়ে আপনার সাথে কথা বলব।

২) আপনি কি আপনার রোগের নাম জানেন? (হুম জানি), ঠিক আছে ধন্যবাদ, আপনার রোগের নাম Epilepsy, বাংলায় যাকে বলা হয় মৃগী রোগ, এটা মস্তিষ্কের তড়িৎ প্রবাহ সম্পর্কিত একটি রোগ।

৩) মস্তিষ্ক আমাদের শরীরের সকল কাজকর্ম নিয়ন্ত্রন করে, যখন মস্তিষ্কের কোন অংশ থেকে অতিরিক্ত তড়িৎ প্রবাহিত হয় তখন এ জাতীয় রোগ হয়। অনেক ক্ষেত্রেই এ রোগের কারন জানা যায় না, আবার দেখা যায় যে স্ট্রোক, ব্রেইন টিউমার, ব্রেইনে ফোঁড়া, মাথায় আঘাত, রক্তের গ্লুকোজ বা লবনের তারতম্যের জন্য এ রোগ হতে পারে (বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দীর্ঘায়িত প্রসব, মাথায় চাপ, শ্বাস নিতে দেড়ি হওয়া)।

৪) তাই আমরা রক্তের লবনের পরিমান, গ্লুকোজ, ব্রেইনের এম.আর.আই. সহ বিভিন্ন পরীক্ষা করে দেখব যে এ রোগের কোন কারন পাওয়া যায় কিনা।

৫) এ রোগের জন্য হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, খিঁচুনি, জিহ্বায় কামড়, পশ্রাব-পায়খানা করে দেওয়া সহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়।

৬) তবে মনে রাখতে হবে অন্যান্য রোগের মত এটিও একটি রোগ, এটি জ্বিনে ধরা, গজব কিংবা অভিশাপ নয়। এ রোগের চিকিৎসা রয়েছে, এবং ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে এ রোগ সম্পুর্ণ নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব।

৭) অন্যদিকে চিকিৎসা না নিলে এ রোগ মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, যেমন বার বার খিঁচুনি হওয়ার কারনে মস্তিষ্কের কোষগুলো নষ্ট হয়ে স্থায়ী প্রতিবন্ধী হয়ে যেতে পারেন।

৮) এ রোগের চিকিৎসার জন্য আমরা ২ধরনের দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকি, এক জীবন-যাত্রার কিছু নিয়ম মেনে চলা, দুই ঔষধ সেবন।

৯) নিয়মকানুনগুলো হল, উঁচু জায়গার কিনার ঘেষে হাটাচলা করা বাদ দিতে হবে, বিপদজনক মেশিন, জলাশয় কিংবা আগুনের কাছে যাওয়া যাবে না, পুকুর কিংবা গভীর জলাশয়ে গোসল পরিহার করতে হবে, বাথরুম ব্যবহারের সময় দরজা খোলা রাখতে হবে।

১০) যদি খিচুনি হয় তাহলে প্রাথমিক চিকিৎসা হল, রোগীকে বিপজ্জনক স্থান যেমন আগুন, পানি, মেশিন, ফার্নিচার থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়া। রোগীর মুখে চামচ বা অন্য কিছু দেওয়া যাবে না। খিচুনি থামলে রোগীকে বাম কাত করে শুয়িয়ে দেতে হবে। আর খিচুনি যদি ৫ মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে অবিলম্বে হাসপাতাল ভর্তি করতে হবে।

১১) ঔষধ বিভিন্ন রকম রয়েছে, (Please tell the 1st choice according to type of epilepsy) যেমন Sodium Valproate, Carbamazepine, Lamotrigine, Ethosuximide. প্রথমে আমরা একটা ঔষধ কম ডোজে শুরু করব, রোগ নিয়ন্ত্রন না হওয়া পর্যন্ত ডোজ বাড়াব, সর্বোচ্চ ডোজে কাজ না করলে আমরা ঔষধ পরিবর্তন, এমন কি একসাথে দুটি ঔষধও চালাতে পারি।

১২) ঔষধের জন্য বিভিন্ন পার্শপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, যেমন Na-Valproate এর জন্য ওজন বাড়া (Weight gain), মাতাল অনুভূতি (Ataxia), পেটে জ্বালাপোড়া (GI irritation), হাত কাঁপুনি (Tremor);  Carbamazepine এর জন্য ত্বকে দাগ পড়া (SJS), চোখে ডাবল দেখা (Diplopia), মাতাল অনুভূতি (Ataxia), মাথা ঝিনঝিন করা (Dizziness), হার্টের সমস্যা (AV conduction block), জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির কার্যক্ষমতা নষ্ট হওয়া; Ethosuximide এর জন্য মাথা ব্যথা, মাথা ঝিনঝিন, প্যাটে জ্বালাপোড়া, নিস্তেজ লাগা (Lathergy); Lamotrigine এর জন্য মাথা ব্যথা, চামড়ায় দাগ পড়া (SJS), চোখে ডাবল দেখা (Diplopia), মাতাল অনুভূতি (Ataxia), মাথা ঝিনঝিন করা (Dizziness) ইত্যাদি হতে পারে।

১৩) রোগের অবস্থা বুঝে ঔষধের মাত্রা পরিবর্তন করতে এবং ঔষধের পার্শপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা তা নির্নয় করতে আপনাকে নিয়মিত ফলোআপে আসতে হবে।

১৪) ফলোআপের সময় কিছু পরীক্ষা যেমন, রক্তের সিবিসি, ইইজি, সিটি স্ক্যান বা এম.আর.আই. ইত্যাদি করা লাগতে পারে।

১৫) আর বাচ্চা নিতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

১৬) খিচুনি নিয়ন্ত্রনে আসার ২-৪ বছর পর আমরা ঔষধগুলো আস্তে আস্তে বন্ধ করব। পরবর্তী ৫ বছরের জরিপে দেখা গেছে যে, ৫০% রোগী ঔষধ ছাড়াই ভাল থাকে, ২০% রোগীর ঔষধ বন্ধ করলে খিচুনি হয়, তাই ঔষধ চালিয়ে যেতে হয়, আর ৩০% রোগীর ঔষধ খাওয়া সত্যেও খিচুনি হতে থাকে।

১৭) আশা করি আমার কথা বুঝতে পেরেছেন।

১৮) আপনার আর কিছু জানার থাকলে জিজ্ঞেস করতে পারেন।

১৯) ধন্যবাদ।

================================== RheumaLife =================================
=================================== iCarePG ===================================

1 comment:

  1. Its a very good website. Plz Add some histroy proforma its really confusing.and also enriched the national guidelines.

    ReplyDelete