১) আস্সালামুআলাইকুম, আমি ডাঃ ইফতেখার, আপনার রোগ নিয়ে আপনার সাথে কথা বলব।
২) আপনি কি আপনার রোগের নাম জানেন? (হুম জানি), ঠিক আছে ধন্যবাদ, আপনার রোগের নাম SLE, এটা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পর্কিত একটি রোগ।
৩) শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন শরীরের বিরুদ্ধেই কাজ করা শুরু করে তখন এ জাতীয় রোগ হয়।
৪) এ রোগের জন্য গিড়ায় গিড়ায় ব্যথা হওয়া, রোদে গেলে ত্বক জ্বালাপোড়া করা, চুল পড়া, মুখের ভিতর ঘা হওয়া, কিডনি, ফুসফুস, হৃদপিন্ডের সমস্যা সহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়।
৫) এ রোগ সম্পুর্ণ নিরাময় সম্ভব নয়, তবে এ রোগ দাবিয়ে রাখার চিকিৎসা আছে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা নিলে এ রোগের রুগীদের শতকরা ৯৫ ভাগই সাধারন মানুষের মতই স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে সক্ষম।
৬) অন্যদিকে চিকিৎসা না নিলে এ রোগ মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, যেমন কিডনি, ফুসফুস, ব্রেইন সহ বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্ষমতা নষ্ট করতে পারে।
৭) এ রোগের চিকিৎসার ২টি দিক আছে, এক জীবন-যাত্রার কিছু নিয়ম পরিবর্তন করা, দুই ঔষধ সেবন।
৮) নিয়মকানুনগুলো হল, রোদ থেকে বেঁচে থাকতে হবে, ধুমপান বাদ দিতে হবে, জরায়ুর ভিতর শলাকা প্রবেশ করিয়ে যে জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, তা বাদ দিতে হবে ইত্যাদি।
৯) এ রোগে আমরা ২ ধরনের ঔষধ দিয়ে থাকি, উপসর্গ নিরাময়ের জন্য এবং রোগের প্রক্রিয়াকে দাবিয়ে রাখার জন্য। ব্যথার জন্য ব্যথানাশক, যেমন NSAIDs, আর বিভিন্ন অঙ্গের সমস্যা অনুযায়ী ঔষধ। অন্যদিকে রোগের প্রক্রিয়াকে দাবিয়ে রাখার জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায় এমন ঔষধ ব্যবহার করা হয়, যেমন Hydroxychloroquine, Prednisolone, Azathioprine, Ciclosporin ইত্যাদি।
১০) ঔষধের জন্য বিভিন্ন পার্শপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, যেমন কিডনি বা অন্ত্রের সমস্যা হওয়া, রক্ত কমে যাওয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার জন্য সংক্রামক ব্যাধি হওয়া ইত্যাদি।
১১) তাই আপনাকে নিয়মিত কিছু কমন সংক্রামক ব্যধির টিকা নিতে হবে।
১২) ঔষধ খাওয়া অবস্থায়ও এ রোগের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঔষধের মাত্রা পরিবর্তন করা লাগতে পারে।
১৩) তাই রোগের তীব্রতা বুঝতে এবং ঔষধের পার্শপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা তা নির্নয় করতে আপনাকে নিয়মিত ফলোআপে আসতে হবে, শুরুর দিকে ২ সপ্তাহ পরপর, তারপর ১ মাস পরপর, আর রোগের মাত্রা কমে গেলে ৩মাস পরপর ফলোআপে আসতে হবে।
১৪) ফলোআপের সময় কিছু পরীক্ষা যেমন, রক্তের সিবিসি, কিডনির মার্কার, লিভারের মার্কার ইত্যাদি করে চিকিৎসককে রিপোর্ট দেখাতে হবে।
১৫) আর বাচ্চা নিতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
১৬) আপনি আমার কথা বুঝতে পেরেছেন?
১৭) আপনার আর কিছু জানার আছে?
১৮) ধন্যবাদ।
================================== RheumaLife =================================
No comments:
Post a Comment