১) আস্সালামুআলাইকুম, আমি ডাঃ ইফতেখার, আপনার রোগ নিয়ে আপনার সাথে কথা বলব।
২) আপনি কি আপনার রোগের নাম জানেন? (হুম জানি), ঠিক আছে ধন্যবাদ, আপনার রোগের নাম Systemic sclerosis, এটা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পর্কিত একটি রোগ।
৩) শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন শরীরের বিরুদ্ধেই কাজ করা শুরু করে তখন এ জাতীয় রোগ হয়।
৪) এ রোগের জন্য হাতের আঙ্গুলগুলো ফুলে যাওয়া, আঙ্গুলসহ হাত-মুখের চামড়া মোটা এবং টাইট হয়ে যাওয়া, আঙ্গুলের মাথাগুলো চিকন হয়ে যাওয়া এবং অনেক ক্ষেত্রে ঘা হওয়া, ঠান্ডা পানি বা আবহাওয়ায় আঙ্গুলের রঙ্গের পরিবর্তন হওয়া, গিড়ায় গিড়ায় ব্যথা হওয়া, কিডনি, ফুসফুস, অন্ত্রের সমস্যা সহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়।
৫) এ রোগ নিরাময় সম্ভব নয়, চামড়ার যে পরিবর্তন হয়ে গেছে তা আর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনাও সম্ভব নয়, তবে এ রোগ যেন শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ক্ষতি সাধন করতে না পারে সেজন্য বিভিন্ন চিকিৎসা রয়েছে।
৬) কিন্তু চিকিৎসা না নিলে এ রোগ দ্রুত গতিতে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, যেমন কিডনি, ফুসফুস, হৃদপিন্ড সহ বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্ষমতা নষ্ট করতে পারে।
৭) এ রোগের চিকিৎসার ২টি দিক আছে, এক জীবন-যাত্রার কিছু নিয়ম মেনে চলা, দুই ঔষধ সেবন।
৮) নিয়মকানুনগুলো হল, ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে বেঁচে থাকতে হবে, ধুমপান বাদ দিতে হবে, ত্বক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, ত্বক আদ্র রাখতে Vasline/Olive oil ব্যবহার করতে হবে, নিয়মিত ব্যয়াম করতে হবে। পেটে ভার লাগলে উচু বালিশে শুতে হবে, খাওয়ার ১ ঘন্টার ভিতর শোয়া পরিহার করতে হবে।
৯) কি কি ঔষধ দেওয়া হবে, তা নির্ভর করে কোন কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হয়েছে তার উপর। পেট জ্বালাপোড়ার জন্য এন্টিআলসারেন্ট, ব্যথার জন্য ব্যথানাশক ইত্যাদি। যদি গিড়া ব্যথা অধিক প্রকট থাকে তাহলে রোগের প্রক্রিয়াকে দাবিয়ে রাখার জন্য MTX প্রথম চয়েজ, আর যদি শ্বাসকষ্ট অধিক প্রকট থাকে তাহলে রোগের প্রক্রিয়াকে দাবিয়ে রাখার জন্য MMF প্রথম চয়েজ হবে। আঙ্গুলের রঙ পরিবর্তন হলে Nifedipine, Aspirin, Sldenafil দিয়ে থাকি। তাছাড়াও বিশেষ পরিস্থিতিতে High dose steroid, Cyclophosphamide ইত্যাদিও লাগতে পারে।
১০) ঔষধের জন্য বিভিন্ন পার্শপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, যেমন ব্যথার ঔষধের জন্য কিডনি, অন্ত্রের সমস্যা, Steroid এর জন্য মুখ ফুলে যাওয়া, হাড়ের ক্যালসিয়াম কমে যাওয়া, MTX, MMF বা Cyclophosphamide এর জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারনে সংক্রামক ব্যাধি হওয়া ইত্যাদি।
১১) তাই আপনাকে নিয়মিত কিছু কমন সংক্রামক ব্যধির টিকা নিতে হবে।
১২) ঔষধ খাওয়া অবস্থায়ও কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঔষধের ধরন বা মাত্রা পরিবর্তন করা লাগতে পারে।
১৩) তাই রোগের অবস্থা বুঝতে এবং ঔষধের পার্শপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা তা নির্নয় করতে আপনাকে নিয়মিত ফলোআপে আসতে হবে।
১৪) ফলোআপের সময় কিছু পরীক্ষা যেমন, রক্তের সিবিসি, কিডনির মার্কার, লিভারের মার্কার ইত্যাদি করে চিকিৎসককে রিপোর্ট দেখাতে হবে।
১৫) আর বাচ্চা নিতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
১৬) আপনি আমার কথা বুঝতে পেরেছেন?
১৭) আপনার আর কিছু জানার আছে?
১৮) ধন্যবাদ।
================================== RheumaLife =================================
=================================== iCarePG ===================================
No comments:
Post a Comment